করোনা প্রাদুর্ভাব মোকাবিলা করেও পূর্ণ গতিতে এগিয়ে চলছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন তৈরির কাজ। কাজের গতি বাড়াতে প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে অতিরিক্ত যন্ত্রপাতি ও জনবল। এরই মধ্যে কাজের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৪৫ শতাংশ। কাজের এ ধারা অব্যাহত রাখতে পারলে ২০২২ সালের জুনের মধ্যেই রেল চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হবে লাইনটি।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, ‘করোনার কারণে কাজের গতি একসময় থমকে ছিল। এ ছাড়া টানা বৃষ্টির কারণেও প্রকল্পের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কাজের গতি বাড়াতে অতিরিক্ত শ্রমিক ও যন্ত্রপাতি যুক্ত করা হয়েছে প্রকল্পে। প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট সবাই রাত-দিন পরিশ্রম করছেন ক্ষতি পুষিয়ে নিতে।’ তিনি বলেন, ‘এ প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৪৫ শতাংশ। আশা করছি ২০২২ সালের জুনের মধ্যে এ লাইন রেল চলাচল উপযোগী হবে।’ প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব এবং বর্ষার কারণে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি থমকে ছিল বেশ কয়েক মাস। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় পুরোদমে শুরু হয় প্রকল্পের অগ্রগতি। বর্তমানে প্রকল্পে ৮৫ জন চীনা শ্রমিক-কর্মকতাসহ দেশি-বিদেশি হাজারের ওপরে কর্মকর্তা শ্রমিক রাত-দিন কাজ করছেন প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিতে। এরই মধ্যে প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৪৫ শতাংশ। যার মধ্যে রেললাইন তৈরির জন্য মাটি ভরাট কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৬০ শতাংশ। ৯টি স্টেশন বিল্ডিংয়ের মধ্যে ৫টি নির্মাণ কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। ১৪৫টি কালভার্টের মধ্যে ৬০টির কাজ প্রায় শেষ। বাকিগুলোর কাজও চলছে দ্রুতগতিতে। ৩৯টি ব্রিজের মধ্যে ২৫টির নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ। বাকি ব্রিজের নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। বনাঞ্চলের ভিতরে হাতি চলাচলের জন্য তৈরি করা হচ্ছে ওভারপাস ও আন্ডারপাস। দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে চলছে ওভারপাস ও আন্ডারপাস তৈরির কাজও। চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের সরাসরি রেল যোগাযোগ স্থাপনের জন্য রেললাইন নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। বাংলাদেশ সরকার ও এডিবি যৌথ অর্থায়ন করছে প্রকল্পটিতে। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। সমীক্ষা শেষে ২০১০ সালের ৬ জুলাই নতুন রেললাইন স্থাপনের জন্য ডিপিপি অনুমোদন দেয় সরকার। ২০১৬ সালে প্রকল্পটি ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। ২০১৮ সালের মার্চে প্রকল্পের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন চলাচলের উপযুক্ত হলে তা হবে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য যুগান্তকারী প্রকল্পগুলোর একটি। এতে ঢাকা-চট্টগ্রামের সঙ্গে কক্সবাজারের যাতায়াত খুবই সহজ হবে। অধিক সংখ্যক পর্যটক কক্সবাজারে আসবে। বিদেশি পর্যটকদের মধ্যেও আগ্রহ বাড়বে। এতে এ অঞ্চলের মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি হবে।
© স্বত্ত্বঃ ইঞ্জিনিয়ার্স ভয়েস: ২০১৭-২০২৪ --- “ইঞ্জিনিয়ার্স ভয়েস” এ প্রকাশিত/প্রচারিত যেকোন সংবাদ, আলোকচিত্র, অডিও বা ভিডিওচিত্র বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং নিষিদ্ধ।
Leave a Reply