ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন,পরিপূর্ণ ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য সম্পূর্ণ ডিজিটাল শিক্ষা নিশ্চিত করার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গোটা শিক্ষা ব্যবস্থা ডিজিটালে রূপান্তর করার বিকল্প কিছু নেই-এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে প্রধান তিনটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি, ডিজিটাল সংযুক্তি এবং ডিজিটাল ডিভাইসের সহজলভ্যতা। আমাদের মতো দেশের জন্য সবগুলো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে এক ধাপে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর করাটা কঠিন বলে আমরা এখন ব্লেন্ডেড শিক্ষার পথ ধরে হাটছি।’
মোস্তাফা জব্বার একথাও বলেন, দুর্গম অঞ্চলসহ দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যন্ত উচ্চগতির ও দ্রুতবেগের ব্রডব্যান্ড সংযোগ স্থাপন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে দুর্গম ও প্রত্যন্ত চর-দ্বীপ অঞ্চলে সংযোগ প্রদান, ৫জির উদ্বোধন, দেশে ডিজিটাল যন্ত্র উৎপাদন এবং ডিজিটাল ডিভাইস সহজলভ্য করাসহ প্রাথমিক স্তর পর্যন্ত কনটেন্ট প্রস্তুতের ফলে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা কঠিন হবে না।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বৃস্পতিবার রাতে অনলাইনে এটুআই’র ব্যবস্থাপনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, আইসিটি বিভাগ, মেটা (ফেসবুক) এবং আইটিইউ আয়োজিত ‘ইনক্লুসিভ একসেস ফর ব্ল্যান্ডেড এডুকেশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে এসব কথা বলেন।
শিক্ষা মন্ত্রী ড. দীপু মনি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, মেটা’র গ্লোবাল হেড অব কানেক্টিভিটি এন্ড একসেস পলিসি মনিকা দেশাই ও আইটিইউ’র স্পেশাল ইনিসিয়েটিভ গিগা চীফ এলেক্স অং প্যানেলিস্ট হিসেবে অনলাইনে আলোচনায় অংশ নেন।
আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এটুআই প্রোগ্রাম পলিসি এডভাইসার অনির চৌধুরী অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ডিজিটাল সংযোগকে ডিজিটাল বাংলাদেশের মেরুদন্ড হিসেবে অভিহিত করে বলেন, দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যয়ে উচ্চগতির ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে অপটিক্যাল ফাইভার সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। যে সব দুর্গম অঞ্চলে বিশেষ করে দ্বীপ, চর, পার্বত্য অঞ্চল এবং হাওর এলাকায় অর্থাৎ যেখানে অপটিক্যাল ফাইভার সংযোগ পৌঁছানে সম্ভব নয়,সে সকল অঞ্চলে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মাধ্যমে সংযোগ প্রদানের কাজ শুরু হয়েছে। জনগণের দোরগোড়ায় ডিজিটাল সেবা নিশ্চিত করতে ডাকঘরগুলোকে ডিজিটাল সেবা কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে ডিজিটাল সংযোগ প্রদান করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ৫৮৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফ্রি ওয়াইফাই জোন স্থাপন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ আগামী ডিসেম্বরে ‘ফাইভ-জি প্রযুক্তির যুগে’ প্রবেশ করছে উল্লেখ করে মোস্তাফা জব্বার বলেন, কৃত্রিমবুদ্ধিমত্তা, আইওটি , রোবটিক্স, ব্ল¬কচেইন প্রভৃতি প্রযুক্তির অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে ফাইভ-জি। এরই ধারাবাহিকতায় শিক্ষা, চিকিৎসা, শিল্প ও বাণিজ্যে বিস্ময়কর পরিবর্তন সূচিত হবে।
শুধু তাই নয়, ঢাকায় বসে চিকিৎসকরা ফাইভ-জি প্রযুক্তি ব্যবহার করে দুর্গম অঞ্চলে রোগীর অপারেশন সম্পন্নকরতে পারবেন বলেও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জানিয়েছেন । তিনি দেশের ডিজিটাল অবকাঠামো গড়ে তুলতে সহায়তা করার জন্য মেটাক ও আইটিইউ’র প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী দৃঢ়তার সাথে বলেন, বর্তমান সরকার শিক্ষা ব্যবস্থাকে ডিজিটাল রূপান্তরের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তিনি মেটা ও আইটিইউকে এ বিষয়ে সহায়তা করার আহ্বান জানান।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশে ডিজিটাল সংযুক্তির বিস্তার ঘটেছে। তিনি ফেসবুক কতৃপক্ষকে কেবল টেক্সট ব্রাউজিং ফ্রি না করে ইন্টারএ্যাকটিভ মাল্টিমিডিয়া কনটেন্টও ফ্রি করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে প্যানেলিস্টরা স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার বিষয়-ভিত্তিক অগ্রগতি ও নীতিগত বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
© স্বত্ত্বঃ ইঞ্জিনিয়ার্স ভয়েস: ২০১৭-২০২৪ --- “ইঞ্জিনিয়ার্স ভয়েস” এ প্রকাশিত/প্রচারিত যেকোন সংবাদ, আলোকচিত্র, অডিও বা ভিডিওচিত্র বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং নিষিদ্ধ।
Leave a Reply